
সাব্বির হোসেন, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের অসহায় মোস্তাকিন-সখিনা দম্পতির পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিতম সাহার নেতৃত্বে ওই দম্পতির বাড়িতে গিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা হয়।
সহায়তার মধ্যে ছিল— ৪ বান্ডিল ঢেউটিন, নগদ ১২ হাজার টাকার চেক, ৪ বস্তা শুকনো খাবার প্যাকেট (প্রতি বস্তায় ১০ কেজি চালসহ ডাল, তেল, চিনি, লবণ, মসলা ইত্যাদি), ৫ পিস কম্বল ও ১ মণ সরিষা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, মোস্তাকিন সাহেব বয়স্ক ভাতাভোগী এবং তার এক প্রতিবন্ধী সন্তানও প্রতিবন্ধী ভাতা পান। তবে তার স্ত্রী এতদিন বয়স ৬৫ বছরের নিচে থাকায় বয়স্ক ভাতা পাননি। এখন তাকে সেই ভাতার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তার এক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নাতনীর জন্যও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ইউএনও প্রিতম সাহা বলেন, “তাদের নাতি-নাতনিদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। জীবিকা নির্বাহের জন্য দোকান বা অন্য কোনো বিকল্প কর্মসংস্থানের প্রয়োজনীয়তা জানালে আমরা সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি গণমাধ্যমে মোস্তাকিন-সখিনা দম্পতির মানবেতর জীবনযাপনের সংবাদ প্রচারের পর জেলা প্রশাসক, নীলফামারী এবং বিভাগীয় কমিশনার, রংপুরের নির্দেশনায় উপজেলা প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পাশে দাঁড়ায়।
এর আগে কয়েক বছর পূর্বেও গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোস্তাকিনকে একটি ষাঁড় কেনে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভাবের তাড়নায় তিনি সেটি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। পরে এক দয়ালু ব্যক্তি আরেকটি গরু কিনে দিলেও সেটিও জীবনের বাস্তবতায় বিক্রি করতে হয় তাকে।
মোস্তাকিন-সখিনা দম্পতির ৪ মেয়ে ও ৩ ছেলে রয়েছে। তাদের একজন ছেলে ও এক নাতনি প্রতিবন্ধী। অপরদিকে একজন মেয়ে তালাকপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে বাবার বাড়িতেই অবস্থান করছেন। ভগ্নপ্রায় কাঁচা ঘরে এই পরিবারটি চরম দারিদ্র্যের মধ্যে দিনাতিপাত করছে।
উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধি সহযোগে ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোয় স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও বিভাগীয় কমিশনারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
পরবর্তীতেও যেকোনো প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসন এই পরিবারের পাশে থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন