
নিজস্ব প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী ও কন্যা শিশুর মানবাধিকার বাস্তবায়ন প্রেক্ষিতে এক গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বেসরকারি সংস্থা পল্লীশ্রী ও দাতা সংস্থা নেটজ বাংলাদেশ যৌথভাবে বাস্তবায়িত হোপ প্রকল্পের উদ্যোগে বুধবার (২২ অক্টোবর ২০২৫) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এ গণশুনানির আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা।
তিনি বলেন, “সমাজে যারা নির্যাতনের শিকার, পল্লীশ্রী তাদের সামনে নিয়ে এসেছে এবং কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে— এজন্য সংস্থাটিকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের সমাজে অনেকেই মনে করে দেনমোহর কেবল তালাকের পর পাওয়া যায়, কিন্তু এটি নারীর অধিকার। যৌতুক দেওয়া ও নেওয়া দুটোই অপরাধ। নারী আজ পরিবারে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এমনকি ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনাও আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে, প্রতিবাদ করতে হবে এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যদি মানবিক হই এবং নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি, তাহলে সমাজে এ ধরনের মামলা অনেক কমে যাবে।”
তিনি নির্যাতনের শিকার নারী ও পরিবারের পাশে থেকে পরামর্শ ও সহায়তার জন্য পল্লীশ্রীর হোপ প্রকল্পের সঙ্গে যোগাযোগের আহ্বান জানান।
গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, উপসহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা, বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, নাগরিক সমাজ সংগঠনের সদস্য, শিক্ষক ও নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা।
অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেন হোপ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সামশুন নাহার।
তিনি বলেন, “আইনের বিচার পাওয়ার অধিকার সবার আছে, কিন্তু আদালত, হাসপাতাল ও পুলিশের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমাদের সমন্বয় বাড়াতে হবে।”
পল্লীশ্রীর হোপ প্রকল্প ও গণশুনানির উদ্দেশ্য তুলে ধরেন প্রকল্প সমন্বয়কারী মাহমুদ মানিক।
গণশুনানির জুড়ি বোর্ড পরিচালনা করেন গোবিন্দগঞ্জ সরকারি কলেজের এক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালতের অ্যাডভোকেট এবং এক অবসরপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ। জুড়ি বোর্ডের রায়ের মাধ্যমে কার্যক্রম শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন— প্রকল্পের টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর মতিয়া বেগম মুক্তি, এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মাজেদুর রহমান সুজন, তাইবাতুন নাহার প্রীতি, এফএফ শামীমা নাসরিন, রওশন আলম, দিপ্তী রায়, সিএসও সদস্য এবং স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।
গণশুনানিতে অংশগ্রহণকারীরা নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ, মানবাধিকার সুরক্ষা ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক মো: আজহারুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়: ইব্রাহিমপুর, মিরপুর, ঢাকা-১২১০। আঞ্চলিক কার্যালয়: উকিলের মোড়, কলেজ স্টেশন রোড়, নীলফামারী।