
নিজস্ব প্রতিনিধি নীরা:
তামাকের ব্যবহার রোধে নজির স্থাপন করল মালদ্বীপ। দেশটি বিশ্বের প্রথম মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্র হিসেবে ‘প্রজন্মভিত্তিক তামাক নিষিদ্ধ আইন’ কার্যকর করেছে। নতুন এই আইনে ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারির পর জন্ম নেওয়া কেউ সারাজীবন তামাক কিনতে, ধূমপান করতে বা কোনোভাবে ব্যবহার করতে পারবে না।
গত শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে আইনটি কার্যকর হয়েছে। মালদ্বীপের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তামাকের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে এবং তামাকমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যেই এই যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে দেশে তামাক বিক্রির আগে বিক্রেতাদের ক্রেতার বয়স যাচাই করা বাধ্যতামূলক। ফলে ২০০৭ সালের পর জন্ম নেওয়া কেউ কোনো অবস্থাতেই তামাকজাত পণ্য কিনতে পারবে না।
নিষেধাজ্ঞাটি সব ধরনের তামাকপণ্য— সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, খয়েরি তামাকসহ ইলেকট্রনিক সিগারেট ও ভ্যাপের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। উল্লেখ্য, ইলেকট্রনিক সিগারেট ও ভ্যাপ মালদ্বীপে আগেই সব বয়সের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
প্রায় পাঁচ লাখ জনসংখ্যার এই দ্বীপদেশে তামাক সেবন একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর তথ্য অনুযায়ী, মালদ্বীপে ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের প্রায় ২৫ শতাংশ তামাক ব্যবহার করে। ২০২১ সালের এক জরিপে দেখা যায়, ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী কিশোরদের মধ্যেও তামাক ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল।
বিশ্বব্যাপী ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুসারে, প্রতিবছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষ তামাকজনিত রোগে প্রাণ হারায়। সংস্থাটি তামাককে আধুনিক যুগের অন্যতম ভয়াবহ জনস্বাস্থ্য বিপর্যয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মালদ্বীপের এই সিদ্ধান্ত দক্ষিণ এশিয়া তথা পুরো বিশ্বে তামাক নিয়ন্ত্রণে এক অনুপ্রেরণাদায়ী দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
মন্তব্য করুন