
নিজস্ব প্রতিবেদক, নীরা :
কলাকে বলা হয় সহজলভ্য ‘সুপারফুড’। এটি যেমন পুষ্টিগুণে ভরপুর, তেমনই শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তিরও দারুণ উৎস। সবজি হিসেবেও যেমন খাওয়া যায়, তেমনি ফল হিসেবেও পাকা কলা জনপ্রিয়। তবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য কোন ধরনের কলা সবচেয়ে নিরাপদ— কাঁচা, পাকা নাকি মজে যাওয়া— সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন পুষ্টিবিদরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কলা যত বেশি পাকে, এর ভেতরের স্টার্চ ততটাই পরিবর্তিত হয়ে প্রাকৃতিক চিনি যেমন গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজে রূপ নেয়। ফলে কাঁচা, আধাপাকা ও অতিপাকা কলার গঠন ও রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব এক নয়।
কাঁচকলা: ডায়াবেটিকদের সেরা বিকল্প
কাঁচকলায় মিষ্টত্ব কম এবং ফাইবারের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি। এই ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি হজমতন্ত্রের জন্য উপকারী, কারণ কাঁচকলা প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে— যা অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়ায় ও প্রদাহ কমায়।
অল্প পাকা বা আধাপাকা কলা
যে কলা পুরোপুরি কাঁচা নয়, আবার সম্পূর্ণ পাকা নয়— সেটিও উপকারী। এই অবস্থায় ফলটির পটাশিয়াম মাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে, যা পেশি ও স্নায়ুর কার্যক্রম ঠিক রাখতে সাহায্য করে। যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা এই ধরনের কলা সীমিত পরিমাণে খেতে পারেন।
হলুদ বা সম্পূর্ণ পাকা কলা
পুরোপুরি পাকা কলায় স্টার্চ প্রাকৃতিক চিনিতে রূপান্তরিত হয়ে মিষ্টতা বাড়ায়। এটি দ্রুত এনার্জি দেয়, তাই যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের জন্য এটি উপযোগী। তবে ডায়াবেটিকদের জন্য নয়, কারণ এতে শর্করার মাত্রা তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে।
মজে যাওয়া কলা: একেবারে নয়
যে কলায় কালচে বা বাদামি দাগ পড়ে, সেটি আসলে অতিপাকা বা মজে যাওয়া কলা। এতে শর্করার পরিমাণ সর্বাধিক এবং এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের এই ধরনের কলা থেকে দূরে থাকা উচিত।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য সবচেয়ে ভালো হলো কাঁচকলা বা অল্প পাকা কলা। এতে ফাইবার বেশি, শর্করা কম এবং হজমের জন্যও উপকারী। অন্যদিকে মজে যাওয়া অতিপাকা কলা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত।
মন্তব্য করুন