
নিজস্ব প্রতিবেদক নীরা:
বাঙালির খাবারের টেবিলে ভাত শুধু খাদ্য নয়, একধরনের আবেগ। দিনের তিন বেলাতেই ভাত না হলে অনেকেই যেন সম্পূর্ণ খাবার পেয়েছেন বলে মনে করেন না। কিন্তু ওজন কমানোর পরিকল্পনা শুরু করতেই বেশির ভাগ মানুষ প্রথমেই ভাতকে নিষিদ্ধ তালিকায় রাখেন। তবে পুষ্টিবিদদের মতে, ভাত বাদ দেওয়া নয়—ভাতকে সঠিকভাবে খাওয়া-ই আসল কৌশল।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় নিউট্রিশন কোচ জাস্টিন গিচাবা তার একটি ভিডিওতে জানান, ভাত শুধু খালি খেলে শরীরে চর্বি জমার প্রবণতা বাড়ে ঠিকই, কিন্তু সঠিক খাবারের সঙ্গে মিলিয়ে খেলে এই ভাতই ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
কেন ভাত খেলে দ্রুত ক্ষুধা লাগে?
গিচাবা জানান, ভাত খুব দ্রুত হজম হয়। ফলে খাওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই আবার ক্ষুধা অনুভূত হয়। এতে মানুষ অজান্তেই বেশি খাবার খেয়ে ফেলেন—যার ফলাফল হয় বাড়তি ক্যালরি গ্রহণ ও ওজন বৃদ্ধি।
তার ভাষায়, ভাত থেকে পাওয়া শক্তি দ্রুত শেষ হয়ে যায়, তাই শরীর আবার নতুন খাবার চাইতে থাকে।
চিকেন-রাইস কি আদর্শ ডায়েট?
জিমপ্রেমীদের কাছে ভাতের সঙ্গে গ্রিলড চিকেন জনপ্রিয় হলেও গিচাবার মতে এই কম্বিনেশন ততটা নিখুঁত নয়। তার পরামর্শ, ভাত খেতে চাইলে খাবারে উচ্চ ফাইবার যুক্ত করা জরুরি। কারণ—
ফাইবার ধীরে হজম হয়
দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে
অতিরিক্ত খাওয়া কমায়
রক্তে চিনি ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে
অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
প্রতিদিন কত ফাইবার প্রয়োজন?
তিনি জানান, প্রতিদিন ৩০ গ্রাম ফাইবার বা প্রতিমিলে অন্তত ১০ গ্রাম ফাইবার রাখলে ভাত খেয়েও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়ে যায়।
যে খাবারগুলো রাখলে উপকার মিলবে
তার সুপারিশ অনুযায়ী, নিয়মিত খাদ্য তালিকায় নিচের খাবারগুলো যুক্ত করতে পারেন—
বিনস
ছোলা
মসুর ডাল
সবুজ মটর
পালংশাক
ব্রকোলি
অ্যাভোকাডো
মিষ্টি আলু (যা অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়)
গিচাবার মতে, এই খাবারগুলো প্রতিদিনের ডায়েটে রাখলে ভাত খাওয়ার পরও ক্ষুধা কম লাগবে এবং শরীর সহজেই অতিরিক্ত ক্যালরি জমতে দেবে না।
সংক্ষেপে
ভাতকে শত্রু না ভেবে, খাবারে ফাইবার ও পুষ্টির সঠিক সমন্বয় করাই ওজন কমানোর মূল কৌশল। সঠিক পরিমাণে ভাত, সাথে ফাইবারসমৃদ্ধ সবজি ও ডাল—এই ব্যালান্স বজায় রাখতে পারলেই ভরপেট ভাত খেয়েও মেদ কমানো সম্ভব।
মন্তব্য করুন