
নিজস্ব প্রতিবেদক নীরা :
শীতের সময় সকালে ঘুম থেকে উঠলেই জমে থাকা ঠান্ডায় অনেকের শরীর শক্ত হয়ে আসে। বিশেষ করে ঠান্ডা হাওয়ার ছোঁয়ায় গোসল যেন অসম্ভব মনে হয়। ঠিক তখনই গরম পানির গোসল যেন বাড়তি স্বস্তি এনে দেয়। শরীর দ্রুত উষ্ণ হয়, মনও চাঙ্গা হয়ে ওঠে। বাইরে কাজ করেন কিংবা দীর্ঘ সময় শীতের মধ্যে থাকতে হয়—এমন মানুষের কাছে গরম পানির গোসল সত্যিই আশীর্বাদের মতো।
তবে স্বস্তির আড়ালেও লুকিয়ে থাকতে পারে কিছু ঝুঁকি। অনেকেই জানেন না, অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করলে শরীরের কিছু ক্ষতিও হতে পারে। তাই শীতে গরম পানি ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা জানা জরুরি।
গরম পানির গোসলের উপকারিতা
১. দ্রুত শরীর উষ্ণ করে
শীতকালে গরম পানি শরীরের টেম্পারেচার দ্রুত বাড়ায়। হাত-পা জমে থাকা অস্বস্তি কমে এবং সকালের শুরুটা হয় অনেকটাই স্বস্তিদায়ক।
২. ব্যথা ও জড়তা কমায়
গরম পানি রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে। এতে মাংসপেশির জড়তা, ক্লান্তি ও হালকা ব্যথা কমে যায়। কাজের পর বা ঠান্ডায় থাকার পর গরম পানিতে গোসল তাই বেশ আরাম দেয়।
৩. মানসিক প্রশান্তি আনে
গরম পানির উষ্ণতা শরীরকে যেমন আরাম দেয়, তেমনই মানসিক চাপও কিছুটা কমায়। গোসল শেষে সতেজ অনুভব হয়।
গরম পানির ক্ষতিকর দিক
১. ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়
অতিরিক্ত গরম পানি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে দেয়। ফলে ত্বক দ্রুত শুষ্ক হয়, খোসখোসে ভাব দেখা দেয় এবং চুলকানি বাড়ে।
২. চুলের ক্ষতি
খুব গরম পানি চুলের বাইরের স্তর (কিউটিকল) দুর্বল করে। এর ফলে চুল রুক্ষ, ফেটে যাওয়া এবং ভঙ্গুর হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
৩. হৃদরোগীদের জন্য ঝুঁকি
যাদের হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে, তাদের জন্য অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল বিপজ্জনক হতে পারে। হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনে শরীরে চাপ পড়ে।
তাহলে কীভাবে গোসল করা উচিত?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—
✔ অতিরিক্ত গরম নয়, মাঝারি গরম পানি সবচেয়ে নিরাপদ।
✔ গোসলের সময় খুব বেশি দীর্ঘ না হওয়াই ভালো।
✔ ত্বক শুষ্ক হলে গোসল শেষে দ্রুত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।
সারসংক্ষেপ
শীতকালে গরম পানিতে গোসল নিঃসন্দেহে আরামদায়ক। তবে আরামের জন্য অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করলে ত্বক, চুল এমনকি হৃদ্স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। তাই মানুষের উচিত আরামের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সতর্কতাও মেনে চলা।
মন্তব্য করুন