মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কে একটি বেপরোয়া গতির যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন বাবা আশরাফুল ইসলাম (৫২) ও তার মেয়ে রুবাইয়া খাতুন (১৫)।
পেশায় বাবা ছিলেন “পাগলু” (স্থানীয়ভাবে তৈরি ডিজেলচালিত তিন চাকার যানবাহন) চালক। মেয়ে বোদা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। প্রতিদিন সকালে মেয়েকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে ওই যানবাহন নিয়েই বাবা বের হতেন আয় রোজগারের আশায়। কিন্ত আজ ঘাতক বাস পেছন থেকে “পাগলু”কে ধাক্কা দিলে মারা যান বাবা ও মেয়ে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী ভিআইপি অটোমোবাইলসের একটি বাস তীব্র গতিতে আসছিল। বাসটি ভুল্লীর খোশবাজার মাদ্রাসার দক্ষিণে পোস্ট অফিসের কাছে পৌঁছালে সামনে থাকা “পাগলু” গাড়িকে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয়।
গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের ভুল্লী থানার খুলিশাকুড়ি পোস্ট অফিসপাড়ার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম। তার একমাত্র যাত্রী ছিল তারই আদরের মেয়ে রুবাইয়া খাতুন, বোদা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। বাবা তার মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন।
বাসের ধাক্কায় “পাগলু” গাড়িটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং এর চালক আশরাফুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তার নিথর দেহ পড়ে থাকে রাস্তার ওপর। গুরুতর আহত অবস্থায় ছটফট করতে থাকা মেয়ে রুবাইয়াকে স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে-ও মৃত্যুর কাছে হার মানে। বাবা-মেয়ের এই আকস্মিক মৃত্যুতে তাদের পরিবার ও এলাকাবাসীর কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে ভুল্লী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। এটি অত্যন্ত হৃদয় বিদারক একটি ঘটনা। বাসটিকে আটক করা গেলেও চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছেন। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। বোদা হাইওয়ে পুলিশ এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
মন্তব্য করুন