
বাংলাদেশের গণমানুষের বহুদিনের এক দৃঢ় প্রত্যাশা—সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য, সুন্দর ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সাধারণ মানুষ প্রকৃত অর্থে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মানুষ আশায় বুক বাঁধে—এবার তারা নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।
এ প্রেক্ষাপটে ২০২৪ সালের ১৩ জুন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বৈঠক শেষে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়—যদি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়, তবে আগামী বছরের পবিত্র রমজান মাসের আগেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সাহাবুল হক মন্তব্য করেন, শীর্ষ দুই নেতার এ বৈঠক ও যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে জনগণের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে এখনো নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা না হওয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংশয় ও দ্বিধা রয়ে গেছে। নির্বাচনী ব্যবস্থার পিআর (প্রোপরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি বাস্তবায়নের দাবি, গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর কাঠামোগত সংস্কার, এবং জুলাই সনদের আলোকে দিকনির্দেশনা—এসব ইস্যু এখনো আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।
যদিও এসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, তবুও মূল বিষয়টি হওয়া উচিত একটি অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন। এ লক্ষ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করা প্রয়োজন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তুত থাকার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা হয়তো ইঙ্গিত দিচ্ছে—রোজার আগেই নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা জোরদার হচ্ছে এবং চলমান জটিলতা নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের এ যাত্রায়, এখন সময় কার্যকর সিদ্ধান্ত ও বাস্তব উদ্যোগ নেওয়ার।
মন্তব্য করুন