
বিদ্যুৎ বিভাগের অনুমতি ছাড়াই নয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখা এবং সেসব কেন্দ্রের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) যথাযথভাবে অনুমোদন না নেওয়ার কারণে গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার ৫৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ভর্তুকি আটকে রেখেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ বিভাগের ১৪ মে তারিখের একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২১ মে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানায়, নয়টি কেন্দ্রের মধ্যে আটটির জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের সম্মতি রয়েছে এবং একটি কেন্দ্রের জন্য বিসিআরইসিএল উপদেষ্টা পরিষদের সম্মতি মিলেছে। কিন্তু অর্থ বিভাগ ১৭ জুন তার চিঠিতে জানায়, মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদন ও ট্যারিফ অনুমোদন ছাড়া এ ধরনের ব্যয়ের ক্ষেত্রে ভর্তুকি বরাদ্দ আটকে রাখা হয়েছে।
যেসব কেন্দ্র পিপিএ অনুমোদন ছাড়াই চালু ছিল:
১. পটুয়াখালী (পায়রা) ১৩২০ মেগাওয়াট – বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড
২. রামপাল ১৩২০ মেগাওয়াট – বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি
৩. ময়মনসিংহ ২১০ মেগাওয়াট – রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড
৪. কড্ডা ৫২.১৯৪ মেগাওয়াট – রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড
৫. রাউজান ২৫.৫০ মেগাওয়াট – রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড
৬. গাজীপুর ১০৫ মেগাওয়াট – রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড
৭. মিরসরাই ১৬৩ মেগাওয়াট – বি-আর পাওয়ারজেন লিমিটেড
৮. কড্ডা ১৫০ মেগাওয়াট – বি-আর পাওয়ারজেন লিমিটেড
৯. সিরাজগঞ্জ ৬৮ মেগাওয়াট সোলার পার্ক – বাংলাদেশ চায়না রিনিউয়েবল এনার্জি কোম্পানি
এই কেন্দ্রগুলোর সম্মিলিত উৎপাদন সক্ষমতা ৩ হাজার ৪১৩ মেগাওয়াট।
পিপিএ অনুমোদনের বর্তমান অবস্থা
পায়রা কেন্দ্রের পিপিএ অনুমোদন হয় ২০২৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর, রামপাল কেন্দ্রের ২০১২ সালের ২৯ নভেম্বর। ময়মনসিংহ, কড্ডা, রাউজান ও গাজীপুর কেন্দ্রগুলোর অনুমোদন ছিল পুরনো তারিখে। সিরাজগঞ্জ সোলার পার্ক ছাড়া অন্য কোনো কেন্দ্রের জন্য মন্ত্রিপরিষদের ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
বিদ্যুৎ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত আগস্টে কেন্দ্রগুলোর অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা করা হয়, যেখানে এসব অনিয়ম ধরা পড়ে। তার ভাষায়, যেহেতু কেন্দ্রগুলো সরকারি বা যৌথ মালিকানাধীন ছিল, তাই পিপিএ অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এমনকি সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি জানতেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অর্থ বিভাগের সতর্কবার্তা
অর্থ বিভাগ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতে ভর্তুকি পেতে হলে নিয়ম অনুযায়ী পিপিএ ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের মাধ্যমে অনুমোদন নিতে হবে। অন্যথায় ভর্তুকি বন্ধ থাকবে।
মন্তব্য করুন