
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় শুরু হয়েছে পাট কাটার মৌসুম। তবে খাল-বিল ও মাঠে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট জাগ দিতে গিয়ে চরম সংকটে পড়েছেন স্থানীয় চাষিরা। অনেকেই বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশের খাল বা পুকুরের অল্প পানি ব্যবহার করে পাট জাগ দিচ্ছেন। এতে আঁশের মান ঠিকভাবে উন্নত না হওয়ায় আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা পাট কেটে ফেললেও জাগ দেওয়ার জায়গা ও পানি না থাকায় তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। হরিপুরের দুইটি বড় বিলে সম্প্রতি ক্যানেল খনন করা হয়েছে। তবে এই ক্যানেলের মাধ্যমে সরাসরি পানি প্রবাহিত হওয়ায় সেখানে পাট জাগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
পাটচাষি মো. জুলফিকার জানান, “খাল, বিল, নদী, এমনকি পুকুরেও এখন পানি নেই। আমরা পাট কেটেও জাগ দিতে পারছি না। এতে আমরা বড় ধরনের সমস্যায় পড়েছি।”
মুক্তার হোসেন নামের আরেক চাষি বলেন, “বৃষ্টিতে জমিতে অল্প পানি জমেছিল, এতে পাটের গোড়া নষ্ট হয়ে গেছে। যদি পানি বেশি থাকত, তাহলে পাটের গোড়া পচন ধরত না এবং ক্ষেতেই জাগ দেওয়া যেত। এখন আমাদের পাট অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে জাগ দিতে হচ্ছে। ফলে ভ্যান-পিকআপ ভাড়ার কারণে খরচ বেড়ে যাচ্ছে।”
একই অভিযোগ কামারপুকুর গ্রামের আকমল হোসেনের। তিনি বলেন, “আমাদের এলাকায় কোথাও পানি নেই। পাট জাগ দিতে গিয়ে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মানস কুমার রায় জানান, “এ বছর হরিপুর উপজেলায় ৪৭০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। পানি সংকটের কারণে কৃষকরা পাট জাগ দিতে সমস্যায় পড়ছেন। কেউ কেউ বিকল্প হিসেবে পুকুর কিংবা নদীর পানিতে জাগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন।”
চাষিরা দাবি করেছেন, দ্রুত স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জলাধারগুলোতে পানি সরবরাহ কিংবা বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া না হলে এবার পাটের মান ও উৎপাদন দুটোতেই বড় ধস নেমে আসবে।
মন্তব্য করুন