
নীলফামারীতে সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আকুতি
মানব পাচারের শিকার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম বাদশার সন্ধান চেয়ে সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছেন তার স্ত্রী শিউলি আক্তার। রোববার (২০ জুলাই) দুপুরে নীলফামারী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি এই দাবি জানান।
শিউলি আক্তার নীলফামারী সদর উপজেলার গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গেল ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রীসে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম বাদশাকে পাকিস্তানে পাচার করে নীলফামারী শহরের সবুজপাড়া এলাকার মাহবুব হোসেন।
এই পাচার কাজে জড়িত ছিল আরও তিনজন—জেলা শহরের বারইপাড়া এলাকার সুফিয়ান ইসলাম, ডিমলা উপজেলার বাবুরহাট এলাকার আব্দুল মান্নান ও ডোমার উপজেলার পাঙ্গা মটকপুর ইউনিয়নের মেলা পাঙ্গা এলাকার ওমর ফারুক।
অভিযোগ করা হয়, গ্রীসে নেওয়ার কথা থাকলেও তাদের নিয়ে যাওয়া হয় পাকিস্তানে। পরে চার পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরিবারের সদস্যরা প্রতারক মাহবুবের হাতে ৪০ লাখ টাকা পরিশোধ করলেও তিনজন দেশে ফিরে এলেও এখনো দেশে ফিরতে পারেননি জাহাঙ্গীর আলম বাদশা।
শিউলি আক্তার অভিযোগ করেন, পাকিস্তানে তার স্বামীকে অকথ্য নির্যাতন করা হচ্ছে। এখনো তার কোনো খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার।
জাহাঙ্গীর আলম বাদশার মা হাসিনা বানু বলেন, সংসারের স্বচ্ছলতার আশায় ছেলে বিদেশে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রতারকচক্রের ফাঁদে পড়ে এখন সে জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে। ছেলের কোনো খবর না পেয়ে পরিবার চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে। দ্রুত তাকে উদ্ধারে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
একই ঘটনায় ভুক্তভোগী নাছিমা আক্তার জানান, মাহবুব হোসেন একজন পেশাদার প্রতারক। বিদেশ পাঠানোর নামে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। আমার স্বামীকেও অপহরণ করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মুক্তিপণ নেওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পাচারকারীরা তাদের পাকিস্তান থেকে ইরান সীমান্ত পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, প্রতারক মাহবুবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমরা।
মন্তব্য করুন