
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নির্বাচন বৈধ বা আইনসঙ্গত না হলে তার কোনো গুরুত্ব নেই। তিনি জোর দিয়ে বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজন করাই তার প্রধান দায়িত্ব। একইসঙ্গে গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার ও প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে দেশ আবারও পুরোনো সংকটে ফিরে যেতে পারে।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক চ্যানেল নিউজ এশিয়াকে দেওয়া কুয়ালালামপুর থেকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন, সেগুলোর প্রায় সবকটির বাস্তবায়নের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন। নির্বাচনের পর সরকারে থাকার কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও স্পষ্ট করেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূসের ভাষায়, পূর্ববর্তী রাজনৈতিক ব্যবস্থা দুর্নীতি, অপব্যবহার ও অপপ্রয়োগে ভরা ছিল। তাই সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এই তিনটি ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার লক্ষ্যেই তারা কাজ করছেন।
তিনি আরও জানান, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে চলে গেছেন এবং অনুপস্থিতিতেই তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে। ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইউনূস বলেন, যেন তিনি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার সুযোগ না পান।
বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রয়েছে এবং ভারতের সঙ্গেও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চান। পাশাপাশি নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে বঙ্গোপসাগরকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা অঞ্চলে যুক্ত করার সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন।
দায়িত্ব নিতে প্রথমে অনিচ্ছুক থাকলেও ছাত্রনেতা ও সাধারণ মানুষের অনুরোধে রাজি হন বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচন শেষে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন—বাংলাদেশ আর পথভ্রষ্ট হবে না, এবং তরুণরা ভোটের মাধ্যমে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুযোগ পাবে।
মন্তব্য করুন