
রাজশাহীর বামনশিকড় গ্রামের মিনারুল ইসলাম (৩৮) ধারদেনা ও আর্থিক সংকট সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, মিনারুল পেশায় দিনমজুর হলেও সাম্প্রতিক সময়ে ধার-দেনার চাপে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। ঘটনার দিন রাত ৮টা থেকে ৮টা ৩০ মিনিটের মধ্যে তিনি বন্ধুদের সঙ্গে বসে ছিলেন। তার কিছুক্ষণ আগে বাবাকে ফোন করে তিনি বলেন, “আমার জন্য আপনাকে অনেকবার মানুষের কাছে ছোট হতে হয়েছে। আর কোনোভাবে টাকা জোগাড় করার দরকার নেই। আমি অনেক দেনার মধ্যে আছি, আমাকে মাফ করে দেন।”
গ্রামবাসী রিকশাচালক রাকিবুল ইসলাম জানান, মিনারুল প্রায়ই হতাশাজনক কথা বলতেন। তবে হঠাৎ আত্মহত্যার মতো পদক্ষেপ নেবেন—এটা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি।
মিনারুলের বাবা রুস্তম আলী বলেন, সাত-আট বছর আগে ছেলের ঋণ শোধ করতে জমি বিক্রি করেছিলেন তিনি। তবে পরে নতুন করে আবার ঋণগ্রস্ত হয়েছেন কিনা, তা নিশ্চিত নন।
এ বিষয়ে টিএমএসএস খড়খড়ি শাখার ম্যানেজার মশিউর রহমান জানান, মিনারুল প্রায় এক বছর আগে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নেন এবং নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করছিলেন। মাত্র ২,২০০ টাকা বাকি ছিল। কন্যার অসুস্থতার কারণে তাকে আর চাপ দেওয়া হয়নি।
মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ কন্যার চিকিৎসার জন্য প্রায় ৫০ হাজার টাকার প্রয়োজন ছিল। সেই টাকা সংগ্রহ করতে গিয়ে তিনি লজ্জা ও লাঞ্ছনার শিকার হন। পাশাপাশি বর্ষার কারণে দিনমজুরের কাজও পাচ্ছিলেন না। এসব কারণে তিনি চরম হতাশায় ভুগছিলেন।
পারিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ আলী মোর্শেদ জানান, আত্মহত্যার তিন দিন আগে মিনারুল তার কাছে গিয়ে খাদ্যের অভাবে টাকা চান। তখন তিনি সহায়তা হিসেবে দুই হাজার টাকা দিয়েছিলেন। চেয়ারম্যান আরও বলেন, এলাকায় মাদক ও জুয়ার বিস্তার রয়েছে, যা পরিবারগুলোকে আরও সংকটে ফেলছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য সচেতনতামূলক উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন