
লন্ডনের হিথরো, ব্রাসেলস ও বার্লিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে সাম্প্রতিক সাইবার হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সব আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে এবং ১০ দফা বিশেষ নির্দেশনা পাঠিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বেবিচকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সাইবার হামলার সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় সব বিমানবন্দরে তথ্য-প্রযুক্তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়েছে।
বেবিচকের সদস্য (পরিকল্পনা ও পরিচালনা) এয়ার কমোডর আবু সাঈদ মেহবুব খানের স্বাক্ষরিত নির্দেশনাটি দেশের সব বিমানবন্দরের প্রধান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বেবিচকের জারি করা ১০ নির্দেশনা:
১. শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার ও নিয়মিত পরিবর্তন করতে হবে; একই পাসওয়ার্ড বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার করা যাবে না।
২. অপরিচিত বা সন্দেহজনক ইমেইল ও লিংক খোলা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩. হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রাপ্ত সন্দেহজনক লিংক বা অ্যাটাচমেন্টে ক্লিক করা নিষেধ।
৪. সফটওয়্যার ও অ্যান্টিভাইরাস নিয়মিত আপডেট রাখতে হবে।
৫. কোনো অবস্থাতেই পাইরেটেড বা ক্র্যাকড সফটওয়্যার ব্যবহার করা যাবে না।
৬. অফিসিয়াল ডিভাইসে ব্যক্তিগত সফটওয়্যার বা অ্যাপ ইনস্টল না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৭. মাল্টি ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (MFA) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
৮. দাপ্তরিক কাজে কেবল বেবিচকের অফিসিয়াল ইমেইল (caab.gov.bd ডোমেইন) ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
৯. গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নথির নিয়মিত ব্যাকআপ রাখতে হবে।
১০. পেনড্রাইভ ব্যবহারের আগে অবশ্যই স্ক্যান করতে হবে।
বেবিচক সূত্রে জানা যায়, গত মাসে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সাইবার হামলার ঝুঁকি ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে জানানো হয়, লন্ডনের কয়েকটি বিমানবন্দরে সাম্প্রতিক হামলার পর ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ রাখতে হয়েছিল।
এই অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশেও আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বেবিচক জানিয়েছে, দেশের বিমানবন্দরগুলোতে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তিগত মনিটরিং এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও বাড়ানো হচ্ছে।
মন্তব্য করুন