
নিজস্ব প্রতিবেদক, নীরা:
বিশ্বজুড়ে ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে স্বর্ণের দাম। যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়া ও চীনের বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপের পর বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে সোনার দিকে ঝুঁকছেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে স্পট মার্কেটে প্রতি আউন্স সোনার দাম দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ১১৪ ডলার, যা আগের দিনের তুলনায় ০.৫ শতাংশ বেশি। এর আগে বুধবার স্বর্ণের দামে বড় ধরনের পতন দেখা দিয়েছিল।
অন্যদিকে, ডিসেম্বর সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটে সোনার দাম ১.৬ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ৪ হাজার ১২৮ ডলারে পৌঁছেছে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর নতুন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আরোপের পরিকল্পনা করছে। এতে সফটওয়্যারনির্ভর বিভিন্ন পণ্য—যেমন ল্যাপটপ, জেট ইঞ্জিনসহ উচ্চপ্রযুক্তি সামগ্রী অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। চীনের সাম্প্রতিক বিরল খনিজ রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের প্রতিক্রিয়াতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একই সময়ে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথমবারের মতো রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেন-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এতে দেশটির জ্বালানি খাতের দুই বড় প্রতিষ্ঠান, লুকওয়েল ও রোসনেফট, প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম প্রায় ৫৭ শতাংশ বেড়েছে। গত সোমবার এটি ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৮১ ডলারে পৌঁছায়।
বিশ্লেষকদের মতে, সুদের হার হ্রাসের সম্ভাবনা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ধারাবাহিক সোনা কেনা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা—সব মিলিয়ে এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
বাজারে ধারণা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সাধারণত সুদের হার কমলে আয়বিহীন সম্পদ হিসেবে সোনার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়।
ইউবিএসের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা মার্ক হ্যাফেলি বলেন, “স্বর্ণ একটি কার্যকর পোর্টফোলিও ডাইভারসিফায়ার। বৈশ্বিক অর্থনীতি বা রাজনীতি আরও অস্থির হলে দাম ৪ হাজার ৭০০ ডলার পর্যন্ত যেতে পারে।”
অন্যদিকে, স্পট মার্কেটে রুপার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি আউন্সে ৪৯.১৪ ডলার (১.৩ শতাংশ বৃদ্ধি)। প্লাটিনাম ও প্যালাডিয়ামের দাম যথাক্রমে ১ হাজার ৬৪৩ ও ১ হাজার ৪৫৬ ডলারে স্থিতিশীল রয়েছে।
মন্তব্য করুন