
নিজস্ব প্রতিবেদক, নীরা:
আজকের যুগে সময় যেন হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। সকাল শুরু হয় তাড়াহুড়ায়, দিন শেষ হয় ক্লান্তির মধ্য দিয়ে। প্রযুক্তি, ইন্টারনেট, যানজট ও কাজের চাপ—সব মিলিয়ে দিন যেন ছোট হয়ে যাচ্ছে। আধুনিক জীবনের এই দ্রুতগতির বাস্তবতা অনেকটা সেই সতর্কবাণীরই প্রতিফলন, যা প্রায় ১৪ শতাব্দী আগে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) উচ্চারণ করেছিলেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন—একসময় সময় সংকুচিত মনে হবে, মানুষ কাজের ব্যস্ততায় ইবাদত ও নৈতিক দায়িত্ব ভুলে যাবে।
সময় সংকোচন—একটি ভবিষ্যদ্বাণীর বাস্তবতা
আজকের প্রযুক্তিনির্ভর জীবন আমাদের তথ্য ও গতির দুনিয়ায় নিয়ে গেছে, কিন্তু মানসিক প্রশান্তি ও আত্মিক সচেতনতা থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। কাজ, যাতায়াত, সোশ্যাল মিডিয়া—সবকিছু মিলিয়ে মানুষের মনে হচ্ছে দিন যেন আগের চেয়ে অনেক ছোট। এ যেন নবীজির সেই হাদিসের বাস্তব প্রকাশ, যেখানে তিনি সময় দ্রুত অতিক্রমের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন।
মুমিনের করণীয়
ইসলামী পণ্ডিতদের মতে, এই বাস্তবতায় একজন মুমিনের উচিত তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া—
১️⃣ ইবাদতে মনোযোগ বৃদ্ধি করা:
নামাজ, দোয়া, কোরআন তেলাওয়াত ও নফল ইবাদতে মনোযোগী হওয়া। ব্যস্ততার মধ্যেও আল্লাহর স্মরণে নিজেকে যুক্ত রাখা।
২️⃣ সময় ব্যবস্থাপনায় সচেতন থাকা:
প্রতিদিনের কাজ পরিকল্পিতভাবে করা, অলসতা ও বিলম্ব এড়িয়ে চলা। সময়কে নষ্ট না করে ফলপ্রসূ কাজে ব্যবহার করা।
৩️⃣ নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব পালন করা:
পরিবার, সমাজ ও শিক্ষাক্ষেত্রে দায়িত্বশীল থাকা। মানবিকতা, সহমর্মিতা ও সততার চর্চা করা।
শিক্ষা ও উপসংহার
আজকের দ্রুতগামী পৃথিবীতে নবীজির (সা.) এই সতর্কবাণী আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক। সময়কে অবহেলা করলে জীবন থেকে বরকত হারিয়ে যায়। তাই একজন মুমিনের দায়িত্ব হলো সময়কে কল্যাণে ব্যয় করা, ইবাদত ও সৎকাজে নিয়োজিত থাকা।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সময়ের সঠিক ব্যবহার ও কল্যাণকর কাজে তা কাজে লাগানোর তাওফিক দান করুন।
মন্তব্য করুন