
বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রামে আবারও বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। একই সময়ে করোনা সংক্রমণও বাড়ছে সমানতালে, যা জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করছে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৪ জুন পর্যন্ত জেলায় মোট ৪০০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৭১ জন নগরবাসী এবং ২২৯ জন জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। শুধু জুন মাসের প্রথম ২৪ দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩১ জন। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৯ জন, যাদের মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিআইটিআইডি, সরকারি জেনারেল হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বেসরকারি ক্লিনিকে মোট ৪০০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া অনেকে বাসায় থেকেই সুস্থ হয়েছেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আবদুর রব জানান, বর্তমানে করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া—এই তিনটি ভাইরাসজনিত রোগ একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে। উপসর্গ প্রায় এক হওয়ায় রোগ নির্ণয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর জটিলতা খুব একটা দেখা যায়নি এবং অধিকাংশ রোগী চিকিৎসায় দ্রুত সেরে উঠছেন।
করোনার দিক থেকেও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, করোনার সংক্রমণ কিছুটা বেশি হলেও পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আছে। তিনি বলেন, “মানুষ সচেতন হলে সংক্রমণ সহজেই রোধ করা সম্ভব।”
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে প্রতিটি ওয়ার্ডে লার্ভিসাইড ওষুধ ছিটাচ্ছে। পাশাপাশি সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের মশক ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহী জানান, যেসব এলাকায় বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে, সেখানে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। জুলাইয়ের শুরু থেকে মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, “আমরা যে ওষুধ ব্যবহার করছি, তা কার্যকর। আশা করছি, এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই থাকবে।”
মন্তব্য করুন