
দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় একটি বিস্তৃত ও সমন্বিত পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দ্বীপে পর্যটন নির্ভরতার বদলে স্থানীয়দের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং পরিবেশ রক্ষায় পর্যটকদের কাছ থেকে ‘পরিবেশ সংরক্ষণ ফি’ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
স্থানীয়দের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান
উপদেষ্টা জানান, সেন্টমার্টিনের পরিবেশ রক্ষার অংশ হিসেবে তিন বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যা আগামী আগস্ট থেকে শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে ৫০০ পরিবারকে প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। এসব পরিবারকে হাঁস-মুরগি পালন, চিপস উৎপাদন, কৃষি প্রশিক্ষণসহ নানা কার্যক্রমে দক্ষ করে তোলা হবে। ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় সেন্টমার্টিনে দুইজন কৃষি কর্মকর্তা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি, মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জেলেদের সহায়তা বাড়াবে মৎস্য অধিদপ্তর।
পরিবেশ রক্ষায় নেওয়া হচ্ছে ‘সংরক্ষণ ফি’
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সেন্টমার্টিন ভ্রমণকারী পর্যটকদের কাছ থেকে ‘পরিবেশ সংরক্ষণ ফি’ আদায় করা হবে। এ ফি সংগ্রহের দায়িত্ব থাকবে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ওপর। এই অর্থ দ্বীপের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় ব্যয় করা হবে। তবে এখনো ফি-এর নির্ধারিত পরিমাণ নির্ধারণ হয়নি।
প্লাস্টিক বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, আগামী অক্টোবর মাসের পর থেকে সেন্টমার্টিনে ‘সিঙ্গেল ইউজ’ বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করা হবে। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে এ বিষয়ে আগেভাগে জানিয়ে দেওয়া হবে এবং তাদেরকে বিকল্প উপকরণ ব্যবহার করার আহ্বান জানানো হবে।
প্রকল্প ব্যয় ও পরিকল্পনা
পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক এ কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, বিকল্প কর্মসংস্থানের এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় ৭ কোটি টাকা। সভায় সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিস (সিইজিআইএস) একটি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা উপস্থাপন করে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ সচিব ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান।
মন্তব্য করুন