
আলু আমাদের প্রতিদিনের খাবারে এক পরিচিত উপাদান। ভাত, সবজি কিংবা নাস্তার সঙ্গে আলু না থাকলেই যেন খাবারের তালিকা অসম্পূর্ণ লাগে। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে—আলু কীভাবে খাওয়া হচ্ছে, সেটিই নির্ধারণ করে এটি শরীরের জন্য কতটা উপকারী বা ক্ষতিকর হবে।
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানান, আলুর রান্নার ধরন টাইপ–২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে বড় প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে ভাজা আলু যেমন ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ও চিপস নিয়মিত খেলে এই ঝুঁকি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায়।
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী,
যারা সপ্তাহে তিনবার ভাজা আলু খান, তাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।
আর সপ্তাহে পাঁচবার বা তার বেশি খেলেই এই ঝুঁকি বাড়ে প্রায় ২৭ শতাংশ পর্যন্ত।
অন্যদিকে, সেদ্ধ, বেকড বা ম্যাশড আলু খেলে তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকি থাকে—প্রায় ৫ শতাংশ মাত্র।
🥗 বিকল্প কী হতে পারে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা চিপস বাদ দিয়ে যদি স্মার্ট কার্বোহাইড্রেট যেমন ব্রাউন রাইস, হোলগ্রেইন রুটি বা পাস্তা খাওয়া যায়, তাহলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৮ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব। শুধু ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বাদ দিলেই ঝুঁকি প্রায় ১৯ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে।
তবে সতর্ক থাকতে হবে সাদা ভাত বা উচ্চ গ্লাইসেমিক খাবারের প্রতিও, কারণ এগুলোও রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়।
⚠️ কেন ভাজা আলু ক্ষতিকর?
আলু নিজেই কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ একটি খাদ্য। যখন এটি তেলে ডুবিয়ে ভাজা হয়, তখন এতে অতিরিক্ত ফ্যাট ও ক্যালোরি যোগ হয়। এই সংমিশ্রণ রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে টাইপ–২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তৈরি করে।
বিশেষ করে শিশু-কিশোররা নিয়মিত চিপস ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেতে পছন্দ করে—তাই অভিভাবকদের এই বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি।
✅ স্বাস্থ্যকর পরামর্শ
আলু সেদ্ধ বা বেকড করে খাওয়া ভালো।
ভাজা আলুর পরিবর্তে হোল গ্রেইন কার্বস বেছে নেওয়া উচিত।
তেল ও লবণ কমানো দরকার।
খাবারে শাকসবজি, ডাল ও ফল যুক্ত রাখা স্বাস্থ্যরক্ষায় সহায়ক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সপ্তাহে তিনবার বা তার বেশি ভাজা আলু খাওয়ার অভ্যাস থাকলে টাইপ–২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়ে। তাই স্বাদের প্রলোভনে পড়ে নয়, সচেতনভাবে খাবার বেছে নিলেই সুস্থ থাকা সম্ভব।
মন্তব্য করুন