
সৈয়দপুর প্রতিনিধি
নীলফামারীর সৈয়দপুরে রাজনৈতিক জেলা মহিলা দলের সভাপতি ও সেক্রেটারির মধ্যের বিরোধ অবশেষে সংঘর্ষে রুপ নিয়েছে। এর জের ধরে সভাপতির উপর সেক্রেটারির হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে সভাপতি রিনুসহ ছয়জন আহত হয়েছেন। শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাত ১টার দিকে শহরের থানার পাশে এ ঘটনা ঘটে।
আহত অবস্থায় জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওনক জাহান রিনু, তার বোন নিলুফা ইয়াসমীন, ছেলের বৌ উম্মে হানী নাইসসহ আহতদের উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানে তৃতীয় তলায় মহিলা সার্জারী বিভাগের একটা কেবিনে তিনি চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওনক জাহান ও সাধারণ সম্পাদক রুপার মধ্যে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। বিশেষ করে রুপার বিভিন্ন দূর্নীতির প্রতিবাদ করা এবং তা স্থানীয়সহ উর্ধতন নেতৃবৃন্দকে লিখিতভাবে অভিযোগ দেয়া নিয়ে ব্যাপক বিরোধ তৈরী হয়।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে রওনক জাহান তার বোন নিলুফার ইয়াসমিনকে নিয়ে দলীয় অফিসে আসেন। এ সময় সাধারণ সম্পাদক রুপা আপত্তি তুলেন যে নিলুফার ইয়াসমিন বহিষ্কৃত নেত্রী। ফলে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। পরে রওনক জাহান বাসায় ফেরার পথে থানার কাছাকাছি অর্থাৎ রুপার বাসার মোড় এলাকায় রিনুর উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
রওনক জাহান রিনু বলেন, রুপার সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত ঝামেলা নেই। তবে তার নানা অপকর্মের কারণে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ করেছি। এর প্রেক্ষিতে সে অহেতুক আমার প্রতি রুষ্ট। শনিবার রাতে সে পার্টি অফিসে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। পরে আমি বাসায় ফেরার সময় তার লোকজন আমার ওপর হামলা চালায়।
রিনুর বোন নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক রুপা মূলতঃ সন্ত্রাসীতে পরিণত হয়েছেন। এতোদিন তিনি সাধারণ মানুষের সাথে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজিসহ বেআইনি কর্মকাণ্ড করেছে। আর এখন যিনি বয়সে, পদে, সম্মানে তার চেয়ে বড় সেই নিজ দলের সভাপতির উপর সন্ত্রাসী কায়দায় অতর্কিত হামলা চালিয়েছে।
তার ক্যাডার বাহিনী যারা আওয়ামী লীগের ছেলে সাদ্দাম, রুবেল, নাজমাসহ তাদের লেলিয়ে দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে সভাপতিসহ আমাদের ৬ জনকে আহত করেছে। এসময় তারা আমার হাতের সোনার বালা ও নগদ ২০ হাজার টাকা, রিনু আপার মানিব্যাগ হতে মোবাইল ও ৫০ হাজার টাকা এবং তার ছেলে রেজওয়ানের স্ত্রী নাইসের গলার সোনার চেন ছিনতাই করেছে।
রওনক জাহান রিনুর ছেলে বৌ উম্মে হানী নাইস বলেন, সেক্রেটারি রুপা বেপরোয়া ভাবে বিভিন্ন অন্যায় অপকর্ম করে চলেছে। যার কিছু ঘটনা ফেসবুকে ভাইরালও হয়েছে। তারপরও তিনি নিজে সংশোধন না হয়ে উল্টো ভূল ধরিয়ে দেয়ায় আমার শ্বাশুড়ির প্রতি ক্ষুব্ধ। সর্বশেষ আমাদের উপর অন্যায়ভাবে সন্ত্রাসী হামলা করে তার অপকর্মের প্রমাণ পূণরায় দিলেন।
আমরা হামলার শিকার হয়ে থানায় বা হাসপাতালে না গিয়ে দলীয় কার্যালয়ে যাই এবং সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন আক্তার কে আঘাতের চিহ্ন প্রমাণ হিসেবে দেখাই এবং এমন অন্যায়ের বিচার চাই। কিন্তু তারা অভিভাবক হিসেবে কোন দায়িত্বশীল আচরণ না করে উল্টো আমাদেরকে এক প্রকার ধমক দিয়ে পাঠিয়ে দেন।
অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক রুপার মুঠোফোনে কল দেয়া হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর বার বার কল দেয়া হলেও তিনি আর রিসিভ করেননি। তাই তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
একইভাবে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল ওয়াদুদ এর মুঠোফোনে কল দেয়া হলে তিনি রিসিভ না করায় তার মন্তব্যও জানা যায়নি।
মন্তব্য করুন