
নিজস্ব প্রতিবেদক, নীরা:
স্তন ক্যানসারের কথা উঠলেই সবার আগে মনে আসে নারীর নাম। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পুরুষেরও হতে পারে এই মরণব্যাধি। যদিও এর হার তুলনামূলকভাবে কম, তবুও একেবারে উপেক্ষা করার মতো নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি একশো জন স্তন ক্যানসার রোগীর মধ্যে অন্তত একজন পুরুষ। বাংলাদেশেও এমন অনেক ঘটনার প্রমাণ মিলেছে। সমস্যা হলো—পুরুষরা সচেতনতার অভাবে দেরিতে চিকিৎসা নেন, ফলে জটিলতা বেড়ে যায়।
🔹 কেন হয় পুরুষের স্তন ক্যানসার
পুরুষদের শরীরেও অল্প পরিমাণে স্তন টিস্যু থাকে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বা বংশগত জিনগত পরিবর্তন (বিশেষ করে BRCA2 জিনে মিউটেশন) এই টিস্যুতে ক্যানসার কোষের জন্ম দিতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত মদ্যপান, স্থূলতা, লিভারের রোগ, রেডিয়েশনের প্রভাব এবং পারিবারিক ইতিহাস পুরুষের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
🔹 যেসব লক্ষণে সতর্ক হবেন
প্রথম পর্যায়ে সাধারণত ব্যথা থাকে না বলে রোগ অনেক সময় ধরা পড়ে না। তবে নিচের পরিবর্তনগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত—
১. স্তনের নিচে বা পাশে শক্ত গাঁট অনুভব করা
২. নিপল ভেতরে ঢুকে যাওয়া বা আশপাশে লালচে দাগ
৩. নিপল থেকে রক্ত বা অস্বাভাবিক তরল নিঃসরণ
৪. স্তনের ত্বকে দাগ, ভাঁজ বা অস্বাভাবিক পরিবর্তন
🔹 চিকিৎসা ও নিরাময়
চিকিৎসা পদ্ধতি নারীদের মতোই— অপারেশন, কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন ও হরমোন থেরাপির সমন্বয়ে করা হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যত দ্রুত রোগ শনাক্ত করা যায়, তত বেশি সফলতার সম্ভাবনা থাকে।
🔹 সচেতনতাই সুরক্ষা
চিকিৎসকরা বলছেন, পুরুষের স্তন ক্যানসার সম্পর্কে সামাজিক লজ্জা ও অজ্ঞানতা এখনো বড় বাধা। শরীরে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই হতে পারে জীবন বাঁচানোর পথ।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সচেতনতা— এই দুটি অভ্যাসই পারে পুরুষদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে।
তথ্যসূত্র: আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যসংস্থা ও বিভিন্ন ক্যানসার গবেষণা প্রতিষ্ঠান
মন্তব্য করুন