
নিজস্ব প্রতিবেদক নীরা;
ইসলাম ধর্মে সন্তান জন্মগ্রহণের পর আল্লাহ তায়ালার প্রতি শুকরিয়া প্রকাশের এক বিশেষ উপায় হলো ‘আকিকা’। নবী করিম (সা.) আকিকাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন,
“প্রত্যেক শিশু তার আকিকার সাথে দায়বদ্ধ অবস্থায় থাকে।”
(তিরমিজি)
আকিকার দায়িত্ব কার?
ইসলামি গবেষণা পত্রিকা মাসিক আল কাউসার–এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সন্তানের আকিকার মূল দায়িত্ব বাবার ওপর বর্তায়। তবে যদি বাবা আর্থিকভাবে অক্ষম হন, তাহলে মা যদি সামর্থ্যবান হন, তিনিও আকিকা করতে পারেন।
এ ছাড়া বাবা-মা উভয়ের সম্মতিতে দাদা, নানা বা অন্য কেউ আকিকা করলে তাও সহিহ হবে। অর্থাৎ আকিকার মূল শর্ত হলো—এটি যেন আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা হয়।
আকিকার সময় নির্ধারণ
হাদিসে আকিকার জন্য নির্দিষ্ট দিনও উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত—
“আকিকা সপ্তম দিনে করা উত্তম। যদি সম্ভব না হয়, তবে চৌদ্দতম দিনে, আর তাও না হলে একুশতম দিনে করা যেতে পারে।”
(মুসতাদরাকে হাকেম : ৭৬৬৯)
তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আকিকা না করতে পারলে পরেও তা আদায় করা বৈধ। ইসলাম এতে বাধা দেয়নি।
নিজের আকিকা নিজে করা যাবে কি?
অনেকে জানতে চান—ছোটবেলায় যদি কারো আকিকা না হয়, তাহলে বড় হয়ে সে নিজেই নিজের আকিকা করতে পারবে কি না।
এ প্রসঙ্গে আল কাউসার–এ বলা হয়েছে, কেউ প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় নিজের আকিকা করতে চাইলে তা করাও বৈধ। বিখ্যাত তাবেয়ি মুহাম্মাদ ইবনে সিরিন (রহ.) বলেছেন,
“আমি যদি জানতাম যে আমার আকিকা করা হয়নি, তাহলে আমি নিজেই নিজের আকিকা করতাম।”
(মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ২৪৭১)
উপসংহার
আকিকা শুধু একটি ধর্মীয় রীতি নয়; এটি সন্তানের জন্মে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি সুন্দর উপায়। এতে যেমন রয়েছে কৃতজ্ঞতার প্রকাশ, তেমনি রয়েছে দরিদ্রদের মাঝে দান ও আনন্দ ভাগাভাগির সুযোগও।
মন্তব্য করুন