
নিজস্ব প্রতিবেদক, নীরা:
ওজন কমাতে চান প্রায় সবাই। কেউ জিমে ঘাম ঝরান, কেউ আবার যোগব্যায়ামে মন দেন। কিন্তু সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর ব্যায়াম হিসেবে এখনো হাঁটার বিকল্প নেই। অফিসে কাজের ফাঁকে কিছুটা হাঁটা, কিংবা রাতের খাবারের পর ছাদে কয়েক চক্কর— এই সহজ অভ্যাসই অনেকের ফিটনেস ধরে রাখার গোপন রহস্য।
চিকিৎসকদের মতে, নিয়মিত হাঁটা শরীরচর্চার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায়। প্রতিদিন দীর্ঘ সময় না হলেও অল্প কিছুক্ষণ হাঁটলেও শরীর সক্রিয় থাকে, হজমশক্তি ভালো হয় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে অনেকেই জানতে চান— ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে উপকারী সময়টা কোনটি: সকাল নাকি সন্ধ্যা?
সকালে হাঁটার বাড়তি সুবিধা
বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, সকালে হাঁটার সুফল একটু আলাদা। ভোরের ঠান্ডা ও নির্মল বাতাস ফুসফুস পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, যা শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানির রোগীদের জন্য উপকারী। এছাড়া সকালে হাঁটলে হৃৎস্পন্দনের হার স্বাভাবিক থাকে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে এবং হজমশক্তি উন্নত হয়।
দিনের শুরুতেই হাঁটার ফলে শরীর সতেজ হয়, মন থাকে প্রফুল্ল। কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়ে এবং দীর্ঘদিনের অনিদ্রা সমস্যা কমে আসে। ফলে সকালে নিয়মিত হাঁটাহাঁটি শুধু ফিটনেস নয়, মানসিক প্রশান্তিও এনে দেয়।
সন্ধ্যায় হাঁটার উপকারিতাও কম নয়
অন্যদিকে, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন বিকেল বা সন্ধ্যা সময়টিও হাঁটার জন্য উপযুক্ত। সারাদিনের ব্যস্ততার পর সামান্য হাঁটাহাঁটি শরীর ও মনের ক্লান্তি দূর করে, মানসিক চাপ কমায়। রোদ না থাকায় দীর্ঘ সময় হাঁটলেও ঘাম বা ক্লান্তি হয় না।
এ সময় হাঁটলে ঘুম ভালো হয়, শরীরের বাড়তি ক্যালোরিও ধীরে ধীরে গলে যায়। যারা সকালে উঠতে পারেন না বা ব্যস্ত সূচির কারণে সময় পান না, তাদের জন্য বিকেলের সময়টাই আদর্শ বিকল্প হতে পারে।
শীতকালে সকালে হাঁটার কিছু সতর্কতা
শীত মৌসুমে ভোরের দিকে বাতাসে ধুলাবালি ও দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। বিশেষ করে অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্টে ভোগা ব্যক্তিদের জন্য এই সময় হাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, শীতে রোদ উঠলে বা কিছুটা বেলা বাড়লে হাঁটা স্বাস্থ্যসম্মত।
গবেষকদের মত: সময় নয়, নিয়মটাই মুখ্য
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে বা বিকেলে— কোনো নির্দিষ্ট সময়ই “সবচেয়ে কার্যকর” নয়। মূল বিষয় হলো নিয়মিত হাঁটা। দিনে যে সময়টিতে আপনি সবচেয়ে স্বস্তি ও উদ্যম অনুভব করেন, সেটাই আপনার জন্য উপযুক্ত সময়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
সময় নিয়ে চিন্তা না করে আজ থেকেই হাঁটার অভ্যাস শুরু করুন। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট নিয়মিত হাঁটলে শুধু মেদ ঝরবে না, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস ও মানসিক চাপও কমবে। হাঁটুন নিয়মিত, থাকুন সুস্থ ও চনমনে।
মন্তব্য করুন