
সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকেই প্রথমেই ব্রাশ করেন। আবার কেউ কেউ আগে পানি পান করেন, তারপর ব্রাশ করেন। কেউ কেউ আবার রাতেই ব্রাশ করে ফেলে রাখেন, সকালে আর করেন না। ফলে প্রশ্ন জাগে—সকালে ব্রাশ না করে পানি পান করা কি স্বাস্থ্যসম্মত?
স্বাস্থ্যবিষয়ক একাধিক গবেষণা বলছে, সকালে ব্রাশ না করেই পানি পান করলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না। বরং এটি বেশ উপকারী। ঘুমের সময় মুখে কিছু ব্যাকটেরিয়া তৈরি হলেও তা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। পানি পানের সময় এই ব্যাকটেরিয়াগুলো পাকস্থলীতে পৌঁছে গিয়ে অ্যাসিডিক পরিবেশে ধ্বংস হয়ে যায়। অনেক সংস্কৃতিতে যেমন জাপানে, সকালে উঠে ব্রাশ করার আগেই পানি পান করার রীতি রয়েছে। চিকিৎসকরাও সকালে খালি পেটে পানি পান করার পরামর্শ দেন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, সকালে ব্রাশ না করেই পানি পান করার কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা—
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
মুখের লালায় থাকা প্রাকৃতিক এনজাইম ও উপকারী ব্যাকটেরিয়া শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। ফলে বিভিন্ন সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং রোগের ঝুঁকি কমায়।
হজমশক্তি ও পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি
রাতে ঘুমের সময় শরীরে জমে থাকা টক্সিন সকালে পানি পান করার মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। এতে পাকস্থলী পরিষ্কার থাকে এবং হজমশক্তি বাড়ে। পাশাপাশি গ্যাস্ট্রিক ও বদহজমের ঝুঁকিও কমে।
বিপাকক্রিয়া (মেটাবলিজম) বাড়ায়
খালি পেটে পানি পান করলে শরীরের বিপাকক্রিয়া সক্রিয় হয়, যা সারা দিন শরীরকে চাঙা ও কর্মক্ষম রাখে। এতে দেহে পানি শূন্যতা কমে এবং শক্তি বাড়ে।
মাথাব্যথা ও মাইগ্রেন প্রতিরোধে সহায়ক
শরীর পর্যাপ্তভাবে হাইড্রেটেড থাকলে মাথাব্যথা, ক্লান্তি বা মাইগ্রেনের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে। পানি পান কোলন পরিষ্কার রাখতেও কার্যকর।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে
সকালে পানি পান করলে ক্ষুধা কিছুটা কমে যায়, ফলে অতিরিক্ত খাওয়া কমে। এতে শরীরের ক্যালোরি খরচ বাড়ে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহজ হয়।
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়
পানি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। এর ফলে ব্রণ, ফুসকুড়ি বা ত্বকের অন্যান্য সমস্যা কমে। ত্বক সুস্থ, মসৃণ ও উজ্জ্বল থাকে।
উপসংহার
সকালে ব্রাশ না করে পানি পান করলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না, বরং উপকারই হয় বেশি। তবে দীর্ঘমেয়াদে এই অভ্যাস গড়ে তুলতে চাইলে পানি যেন পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
মন্তব্য করুন